বুয়েট থেকে পাশ করছি প্রায় ছয় মাস হতে চললো। এই ছয় মাসে নানান রকমের মানুষের সাথে মিশে আমার উপলব্ধি হলো কোথাও কেউ সুখে নাই।
যার চাকরী আছে সে বলতেছে, চাকরি করা পেইন, প্রতিদিন এক জায়গায় যাওয়া বোরিং। যার চাকরি নাই সে বলতেছে চাকরি ছাড়া ঝামেলায় আছে অনেক। যে বিসিএস এডমিন সে বলতেছে, পাওয়ার কোম্পানীতে বেতন ভালো। যে পাওয়ার কোম্পানীতে আছে, সে বলতেছে এডমিনদের সেই ক্ষমতা আছে হাতে।
যে ইন্ড্রাস্টিয়াল চাকরি করতেছে, সে বলতেছে টিচিং প্রফেশান ভালো বেশি। অল্প পরিশ্রমে বেশি টাকা। যে টিচার সে বলতেছে, কেন শুরুতে ইন্ড্রাস্টিতে ঢুকলাম না, এতদিনে লাখ টাকা বেতন হতো।
যে বিদেশে আছে সে বলতেছে, দেশে একটা সরকারী চাকরি করে আরামে থাকতে পারতাম, হুদাই আসছি বিদেশে।
যে দেশে আছে, সে বলতেছে বন্ধুরা সব বিদেশে মজা করতেছে, আর আমি পেইন খাচ্ছি দেশে। কী বিগাড় রে ভাই। আসল সুখ কই আছে তাইলে?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে আমি পড়লাম সূরা তাকাসুর। এই সূরায় আল্লাহ তায়ালা বলেন, "প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা তোমাদের মোহাচ্ছন্ন রাখে, কবরে যাবার আগ পর্যন্ত।"
আমি বুঝতে পারলাম যে, আমাদের এই সুখের সন্ধানের পিছনে আসলে প্রাচুর্যই আমাদের মোহাচ্ছন্ন করে রেখেছে। আমরা সবসময় বেশি চাই, আর বেশি না পেলেই মনে হয় সুখ পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু আসলে সুখের সাথে প্রাচুর্যের কোনো সম্পর্ক নেই।
সুখ আসলে একটা মানসিক অবস্থা। এটা আমাদের মনের উপর নির্ভর করে। যদি আমরা আমাদের জীবনে সন্তুষ্ট থাকতে পারি, তাহলে আমরা সুখী হতে পারি।
সুখী হওয়ার জন্য আমাদের প্রথমে আমাদের চাওয়া-পাওয়ার তালিকা ছোট করতে হবে। আমরা শুধুমাত্র সেই জিনিসগুলো চাইবো যা আমাদের প্রয়োজন। আর যে জিনিসগুলো আমাদের প্রয়োজন না, সেগুলোর জন্য আমরা হাহাকার করবো না।
দ্বিতীয়ত, আমাদের আমাদের জীবনের ছোট ছোট জিনিসগুলোর জন্য কৃতজ্ঞ থাকতে হবে। আমরা যদি আমাদের জীবনের সুন্দর সুন্দর মুহূর্তগুলোর জন্য কৃতজ্ঞ থাকতে পারি, তাহলে আমাদের মনের মধ্যে সুখের অনুভূতি জাগ্রত হবে।
তৃতীয়ত, আমরা অন্যদের সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসবো। অন্যদের সাহায্য করলে আমাদের মন ভালো থাকে।
আসুন, আমরা সবাই এই তিনটি বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দিই। তাহলে আমরা সুখী হতে পারব।
সুখের কিছু উপায়
- আপনার চাওয়া-পাওয়ার তালিকা ছোট করুন। আপনি শুধুমাত্র সেই জিনিসগুলো চাইবেন যা আপনার প্রয়োজন।
- আপনার জীবনের ছোট ছোট জিনিসগুলোর জন্য কৃতজ্ঞ থাকুন।
- অন্যদের সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসুন।